র'হস্যময়ভাবে গড়িয়ে পড়ছে র'ক্তের স্রোতধারা!
অ্যান্টার্কটিকায় ‘ব্লাড ফলস’ এর নাম হয়তো অনেকেরই জানা আছে। চারপাশে সাদা বরফের পাহাড়। এর মাঝ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে র'ক্তপ্রপাত। এ বিস্ময়কর দৃশ্য দেখতে অনেক মানুষ সেখানে ভিড় জমান।
এ পাহাড়টি অবস্থিত পৃথিবীর একেবারে দক্ষিণ মেরু অর্থাৎ অ্যান্টার্কটিকায়। একেই জায়গাটি অ'ত্যন্ত দুর্গম তার উপর তার প্রকৃতির অ'পার র'হস্য লুকিয়ে রয়েছে স্থানটিতে। এ কারণেই ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণ বাড়ায় এ পাহাড়টি।১৯৩১ সালে প্রথম এ দৃশ্যটি আবিষ্কৃত হয়। এরপর বহু বিজ্ঞানীরা লাল রঙের পানির উৎস খুঁজেছেন। এরপর ২০১১ সালে একদল অ'ভিযাত্রী এ পাহাড়ের র'হস্য উদ্ভাবন করেন। সেখানে তারা দেখেন, অদ্ভুত এ জলপ্রপাতটি বাস্তবেই বিদ্যমান।
যুগে যুগে অনেক বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন যু'ক্তি-প্রমাণ দিয়ে এর ব্যাখ্যা করেছেন। প্রথম দিকে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, কোনো লাল রঙা শ্যাওলার কারণে হয় পানির রং র'ক্তবর্ণ দেখায়। তবে বিষয়টি ঠিক নয়। আনুমানিক ২০ লাখ বছর আগে সৃষ্টি হয় এ র'ক্তের ঝর্ণার।এর উৎসস্থল টমাস গ্লেসিয়া। টেলর হিমবাহ গলে এ র'ক্তপ্রপাতের পানি গড়িয়ে পড়ে। র'ক্তবর্ণ এ পানির গন্ধও না-কি র'ক্তের মতোই। তবে আলাক্সা ফোয়ারব্যাংকস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ'তিরিক্ত লবণাক্ত পানিতে আয়রন থাকায় তা অক্সিডাইজড হয়ে যায়।
একই প্রক্রিয়ায় লোহায় লাল রঙের ম'রিচা ধরে। লবণাক্ত পানি যখন অক্সিজেনের সংস্প'র্শে আসে তখন এর বর্ণ লাল রং ধারণ করে। গবেষকদের মতে, হিমবাহ বি'স্ফোরণের মাধ্যমে বিভিন্ন শাখা-উপশাখা তৈরি হয়ে র'ক্তপ্রপাতে পৌঁছানোর কার্যক্রম অন্তত দেড় মিলিয়ন বছর ধরে হয়েছে।মজার বিষয় হলো, এ ব্লাড ফলসটিতে এমন এক জীবাণু রয়েছে যা চরম অবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে। এ মাইক্রোবিয়াল সম্প্রদায়গুলো পানিতে থাকা সালফেটের মাধ্যমে শক্তি তৈরি করে। মানুষ যেভাবে খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে; ঠিক সেভাবেই অক্সিজেন ব্যবহারের পরিবর্তে এই জীবাণুগুলো সালফেট ব্যবহার করে বেঁচে থাকে।
যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, সালফার আর আয়রনের কারণেই না-কি র'ক্তবর্ণ ধারণ করেছে জলপ্রপাতটি। তবে আরেকটি প্রশ্নও উঠছে তা হলো- জনমানবশূন্য এই অঞ্চলে এতো লৌহ আকরিক এসেছে কী'ভাবে?ব্যাখ্যা বা যু'ক্তি যা-ই থাকুক না কেন, জলপ্রপাতটি বাস্তবে দেখতে যে ভ'য়ংকর সেই বিষয়ে কোনো স'ন্দেহ নেই। এটি দেখলে মনে হবে র'ক্তের সমুদ্র বয়ে চলেছে। আবার এর পাশে বেশ কিছু ভ'য়ংকর জলজ ও স্থলজ প্রা'ণীর উপস্থিতি স্থানটিকে আরো র'হস্যময় ও ঝুঁ'কিপূর্ণ করে তুলেছে।